কোটা নিয়ে আন্দোলন, সংগ্রাম হচ্ছে। পক্ষে-বিপক্ষে অনেক কথা বলা হচ্ছে, স্লোগান হচ্ছে। সরকার তো কোটা বাতিল করেই দিয়েছিল। কোটা রাখার পক্ষে কয়েকজন আদালতের শরণাপন্ন হলে ও কোটা বলবৎ রাখার আদেশের কারণে বর্তমান পরিস্থিতির উদ্ভব হয়েছে। এটাতো এখন আদালতের ব্যাপার। যে যত কথাই বলুক, যত আন্দোলনই করুক এ ব্যাপারে সঠিক সিদ্ধান্ত সর্বোচ্চ আদালত থেকেই আসতে হবে। কিন্তু একটা বিষয় গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ করছি কোটা বিরোধীদের অনেকে মিছিলে, স্লোগানে, টকশোতে মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে কটাক্ষ করছে। এরা কারা? নিশ্চয়ই এরা জামাত, রাজাকারদের পোষ্য, জ্ঞাতি গোষ্ঠী হবে। সরকারের মধ্যে থেকে ও বাহির থেকে এসব রাজাকার চক্র ও বিএনপি, জামাত শিবির চক্র ছাত্রদের আন্দোলনে ইন্ধন দিচ্ছে। সরকারকে জনগণের মুখোমুখি দাঁড় করানোর ঘৃণ্য অপচেষ্টা ও ষড়যন্ত্র করছে। দেশকে অস্থিতিশীল করার পাঁয়তারা করছে কিছু সংখ্যক কুচক্রী মহল। আন্দোলন সংগ্রামে ব্যর্থ হয়ে সরকার বিরোধীরা ছাত্রদের উপর এখন ভর করছে।
মুক্তিযোদ্ধারা জীবন মরণ লড়াই করে আমাদের স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ দিয়েছে। তাদের সাজানো বাগানে আমরা সবাই এখন হাঁটছি। একটু গভীরে চিন্তা করলে দেখা যাবে চাকুরী প্রার্থী ও চাকুরি প্রার্থীদের অভিভাবকসহ আমরা সবাই যে যা কিছুই এ দেশে করছি না কেন তার মূলে রয়েছে মুক্তিযোদ্ধাদের অবদান। মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে যারা বিরুপ সমালোচনা করে, ছাত্র আন্দোলনের নামে মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে টকশোতে কথা বলে, স্লোগান দেয়, তারা দেশ ও জাতির শত্রু । তাদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানাচ্ছি। আমরা অকৃতজ্ঞ জাতি! খেয়া পারাপারের পর আমরা অনেকেই আর মাঝির খবর রাখি না!
মুক্তিযোদ্ধারা জাতির সূর্যসন্তান, তাদের আলোতেই আমরা আলোকিত। মেধাকে প্রাধান্য দিয়ে, মুক্তিযোদ্ধাদের মর্যাদা অক্ষুন্ন রেখে কোটা সমস্যার যুক্তিসঙ্গত সমাধান করতে হবে। পাকিস্তানি শাসক ও শোষকদের সকল বৈষম্য ও অবিচারের বিরুদ্ধে একমাত্র মুক্তিযোদ্ধারাই রুখে দাঁড়িয়ে ছিলেন একথা আমাদের ভুলে গেলে চলবে না। আবার স্মরনে রাখতে হবে মেধাবী জনশক্তি ছাড়া দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতি সম্ভব নয়। তাই স্বাধীন বাংলাদেশে কোটাসহ সব সিদ্ধান্তই হতে হবে বৈষম্যমুক্ত, যুক্তিসঙ্গত, মানবিক ও মুক্তিযোদ্ধা বান্ধব।
ড. আবদুল ওয়াদুদ
প্রেসিডিয়ম সদস্য- বঙ্গবন্ধু পরিষদ